ঘি কীভাবে তৈরি হয় — আমাদের বিশুদ্ধ প্রক্রিয়া
আমাদের ঘি তৈরির প্রতিটি ধাপেই রয়েছে যত্ন, পরিচ্ছন্নতা ও ঐতিহ্য। শুরু থেকেই আমরা নিশ্চিত করি যেন প্রতিটি ফোঁটা দুধ ও প্রতিটি স্তর মাখন সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ থাকে।
-
বিশুদ্ধ দুধ সংগ্রহ:
আমরা স্থানীয় খামার থেকে সংগ্রহ করি খাঁটি গরুর দুধ, যেখানে গরুগুলোকে প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানো হয়, কোনো হরমোন ইনজেকশন বা কেমিক্যাল মিশ্রণ ছাড়াই। দুধ সংগ্রহের পর তা সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা করে সংরক্ষণ করা হয়, যেন কোনো জীবাণু বৃদ্ধি না পায়। -
দুধ থেকে দই প্রস্তুত করা:
ঐতিহ্যবাহী ঘি তৈরির প্রথম ধাপ হলো দুধকে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে তাতে প্রাকৃতিকভাবে দই তৈরি করা। কোনো বাজারজাত “কালচার” বা রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় না। এভাবে তৈরি দই থেকে ঘি-এর আসল স্বাদ শুরু হয়। -
মাখন তোলা:
দই ভালোভাবে জমে গেলে, তা প্রাকৃতিক তাপমাত্রায় রেখে ঘরে তৈরি লাঠি বা হ্যান্ড বিটার দিয়ে ধীরে ধীরে নাড়ানো হয়। কিছু সময় পর দইয়ের ওপর ভেসে ওঠে আসল গাওয়া মাখন—এটি ঘি তৈরির মূল উপাদান। এই প্রক্রিয়ায় কোনো যান্ত্রিক চাপ, তাপ বা কৃত্রিম পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় না। -
মাখন পরিশোধন ও ঘি প্রস্তুত:
প্রাপ্ত মাখনকে পরিষ্কার স্টেইনলেস স্টিলের পাত্রে নিয়ে হালকা আঁচে ধীরে ধীরে সিদ্ধ করা হয়। এই সময় ঘি আলাদা হয়ে আসে, এবং উপরের স্তরে জমে থাকা ফেনা ও নিচে থাকা দুধের আস্তরণ পৃথক করা হয়।
যখন ঘি সোনালী বর্ণ ধারণ করে এবং তার প্রাকৃতিক ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে, তখন তা আগুন থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করা হয়। কোনো ফিল্টার কেমিক্যাল বা সংরক্ষণকারী ব্যবহার না করেই আমরা প্রাকৃতিক কাপড়ের মাধ্যমে ছেঁকে নিই — যেন এর পুষ্টিগুণ ও ঘ্রাণ অক্ষুণ্ণ থাকে। -
প্যাকেজিং প্রক্রিয়া:
ঠান্ডা হওয়ার পর ঘি সংরক্ষণ করা হয় স্বাস্থ্যসম্মত, ফুড-গ্রেড পাত্রে। প্রতিটি বোতল হাতে ভরে সিল করা হয়, এবং কোনো ধাতব বা ক্ষতিকর প্লাস্টিক প্যাকেজ ব্যবহার করা হয় না। প্রতিটি ধাপে কঠোরভাবে মান নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
আমাদের ঘি কেন আলাদা ও বিশেষ
-
সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ও ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে তৈরি।
-
দুধ থেকে ঘি তৈরির পুরো প্রক্রিয়ায় কোনো রাসায়নিক, রং বা সংরক্ষণকারী নেই।
-
ঘি তৈরিতে ব্যবহৃত মাখন আসে সুস্থ গরুর প্রাকৃতিক দুধ থেকে।
-
তৈরি হয় হাতে ও ঘরোয়া তাপে, যা ঘি-এর আসল পুষ্টি বজায় রাখে।
-
ঘি সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয় ফুড-গ্রেড কন্টেইনার, যা গুণগত মান ধরে রাখে দীর্ঘদিন।
খাঁটি গাওয়া ঘি-এর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
১. শক্তি ও পুষ্টির উৎস:
ঘি হলো প্রাকৃতিক স্যাচুরেটেড ফ্যাটের একটি ভালো উৎস, যা শরীরকে শক্তি জোগায় এবং পেশি ও টিস্যু মজবুত করে। এটি বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও দুর্বল দেহের মানুষের জন্য উপকারী।২. হজমে সহায়ক:
ঐতিহ্যবাহী আয়ুর্বেদ অনুযায়ী, ঘি হজমশক্তি বৃদ্ধি করে এবং পাকস্থলীর অম্লতা কমায়। একে “অগ্নিদীপক” বলা হয়, কারণ এটি দেহের ভেতরের জৈব তাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।৩. ত্বক ও চুলের যত্নে:
ঘি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ত্বকের শুষ্কতা দূর করে এবং ত্বককে কোমল রাখে। চুলের গোড়ায় ঘি মালিশ করলে চুল পড়া কমে, চুল হয় ঘন ও উজ্জ্বল।৪. মানসিক প্রশান্তি ও ঘুম:
ঘি-এর ঘ্রাণ ও পুষ্টি মস্তিষ্কে প্রশান্তি আনে। রাতে এক চামচ ঘি গরম দুধের সঙ্গে গ্রহণ করলে ঘুম গভীর হয় এবং মন শান্ত থাকে।৫. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি:
ঘি-তে থাকে ভিটামিন A, D, E ও K — যা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, হাড় মজবুত করে এবং হৃদযন্ত্রকে শক্তিশালী রাখে।
খাঁটি গাওয়া ঘি ব্যবহার করার কিছু দারুণ উপায়
-
ভাত, খিচুড়ি বা ডাল ভাজার সময় এক চামচ ঘি ব্যবহার করুন।
-
সকালে গরম রুটি বা পরোটার সঙ্গে ঘি দিন – স্বাদ ও পুষ্টি দুই-ই পাবেন।
-
গরম দুধে এক চামচ ঘি মিশিয়ে রাতে পান করলে হজম ভালো হয় ও ঘুম প্রশান্ত হয়।
-
শিশুদের খাবারে অল্প ঘি মিশিয়ে দিলে ওজন ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
-
ত্বক ও ঠোঁটের শুষ্কতা দূর করতে ঘি লাগালে তা দ্রুত আরাম দেয়।

Reviews
There are no reviews yet.